আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র চলছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
বিভাগীয় প্রতিবেদক। | মার্চ ২১, ২০২৫ | ০৪:০৩
ছবি: প্রতিবেদক।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি দাবি করেছেন, সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে।
‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ একটি নতুন ষড়যন্ত্র
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই দলটিকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি ওঠে। ছাত্র ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন এই দাবি জানালেও সম্প্রতি আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একাধিক পোস্টে এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন।
ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ
হাসনাত আব্দুল্লাহ দাবি করেন, গত ১১ মার্চ দুপুর আড়াইটায় ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে তাদের সামনে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
তিনি লেখেন, “আমাদের জানানো হয়, একাধিক রাজনৈতিক দলকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাদের দিয়ে তৈরি করা হবে, তারা এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে অস্বীকার করে শেখ মুজিবের আদর্শের আওয়ামী লীগ গঠনের প্রতিশ্রুতি দেবে।”
‘আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক’
হাসনাত আব্দুল্লাহর দাবি, আলোচনার একপর্যায়ে তাদের বলা হয়, “আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোনো বাধা দিলে দেশের সংকটের দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক।”
তিনি এর জবাবে বলেন, “আওয়ামী লীগের সাথে কোনো আপস হতে পারে না। আওয়ামী লীগ ফেরাতে হলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে ফেরাতে হবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের সময়ও তাদের ওপর নানা চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল, তবে তারা জনগণের ওপর আস্থা রেখেছেন।
বিবিসির অনুসন্ধান ও সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া
বিবিসি বাংলা সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া জানতে আইএসপিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
হাসনাত আব্দুল্লাহর এই পোস্টের পর বৃহস্পতিবার রাত ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলটি ছাত্র হল এলাকা ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, “আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজড” এবং “আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন করলে রক্তের বন্যা বইবে”।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বেশ কয়েকটি দল সরব হলেও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে থাকবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ।”
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার সুযোগ নেই, তবে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।”