৫ কোটি টাকা মূল্যের এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস) পাচারের মামলায় কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা সৈয়দুল আমিন (৩৫) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতের রায় ঘোষণা

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক নিশাত সুলতানা এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কুতুব উদ্দিন, আর আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবিদুর রহমান।

মামলার বিবরণ

২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে রামু উপজেলার মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টে ৩০ বিজিবির একটি টিম এক অভিযানের সময় একটি সিএনজিকে থামিয়ে তল্লাশি চালায়। সিএনজিতে থাকা রোহিঙ্গা নাগরিক সৈয়দুল আমিন ও মোহাম্মদ ফাহাদ (১৪) কে আটক করা হয়। পরে সৈয়দুল আমিনের কাঁধে থাকা স্কুল ব্যাগ থেকে এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধার করা হয়, যার বাজারমূল্য ৫ কোটি টাকা।

এ ঘটনায় ৩০ বিজিবির নায়েব সুবেদার মো. মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে রামু থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি রামু থানায় ২১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে দায়ের হয়, যার মামলা নম্বর ৪০/২০২২ এবং এসটি মামলা নম্বর ৮০৯/২০২৩।

বিচারের প্রক্রিয়া

২০২৩ সালের ২১ মার্চ কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতে মামলার চার্জ গঠন করা হয়। মামলার আরেক আসামি মোহাম্মদ ফাহাদ (১৪) অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে পৃথক চার্জশিট দিয়ে বিচারের জন্য শিশু আদালতে পাঠানো হয়।

আদালতে মামলার শুনানির সময় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়, আসামিপক্ষ থেকে ৪ জন সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন করেন। আলামত পরিদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা, আত্মপক্ষ সমর্থন এবং যুক্তিতর্ক শেষে আদালত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন।

রায়

বিচারক নিশাত সুলতানা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০(গ) ধারায় আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।