মায়ের মামলায় আসামি ছেলে, মিথ্যা ও হয়রানি দাবী সন্তানের
বিভাগীয় প্রতিবেদক। | অক্টো ২১, ২০২৫ | ০২:১০
ছবি: প্রতিবেদক।
রেজাউল করিম,
কক্সবাজারের পেকুয়ায় মায়ের দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে ছেলেকে। মামলাটি মিথ্যা বলে দাবি ছলের পরিবারের। এনিয়ে এলাকায় চলছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের হাসানের জুম এলাকায় ঘটনটি ঘটে৷ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার হামিদা বেগম বনাম বাহার উদ্দিন গং এর মধ্যে বাড়ি ভিটার জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিলো। আব্দুল লতিফ দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী থাকার কারণে বাহার উদ্দিন গং তাদের নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতন করে আসছিল। হামিদা বেগমের স্বামী আব্দুল লতিফ প্রবাস থেকে দেশে আসলেও থেমে থাকেনি তার পরিবারের উপর অত্যাচার।
জানাযায়, আব্দুল লতিফ এবং বাহার উদ্দিন তারা আপন মায়ের পেটের ভাই। কিছু জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়। আব্দুল লতিফকে নানাভাবে ঘায়েল করার চেষ্টা চালায় বাহার উদ্দিন গং। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে হুমকিও দেওয়া হয় তার পরিবারকে ৷ বিদেশ থেকে দেশে আবদুল লতিফ টইটং বনকানন স্টেশনে একটি মুদির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করে। সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা সুবাদে বিভিন্ন অভিযোগ এনে প্রতিনিয়ত স্ত্রী হামিদা বেগম এবং তার ছোট বাচ্চাদের ও মারধর করে বাহার উদ্দিন গং। এদিকে সম্প্রতি গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাহার উদ্দিন, তার স্ত্রী রোজিনা বেগমসহ অপর ভাইয়েরা ঝড়ো হয়ে আবদুল লতিফের বসতঘরে হামলা ও ভাংচু চালায়। এ ঘটনায় হামিদা বেগম বাদী হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং সি.আর- ২২৯৭/২৫। কিছুদিন পর স্থানীয় কুচক্রী মহলের যোগসাজশে উক্ত ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য গত ৭ অক্টোবর ২৫ ইং তারিখে আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে তার মা নুর জাহান (৫৭) এবং পিতা হাবিব উল্লাহকে (৮৭) মারধরের অভিযোগ তুলে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। একই পরিবারে দুটি পৃথক মামলার ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আদালত মামলা দুটি তদন্তের জন্য পেকুয়া থানা দায়িত্ব দিয়েছেন। দুজন তদন্ত কর্মকর্তা কে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। গতকাল সকালে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পারি ঘটনটি সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত । ব্যবসায়ী লতিফ ঘায়েল করার জন্য মূলত সাজানো একটি ঘটনা এমনটাই দাবি স্থানীয় ও স্বজনদের।
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মোহাম্মদ আজম তাদের নিকটতম আত্মীয় নরুচ্ছবি সাওদাগর ও
ওসমানসহ অনেকে বলেন মারামারির মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। এগুলো মিথ্যা ও সাজানো ঘটনা।
ভুক্তভোগী আব্দুল লতিফ বলেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে মা-বাবার কাছ থেকে স্ত্রী- সন্তান নিয়ে আলাদা থাকি৷ কিন্তু তাদের ভরনপোষণের জন্য প্রতি মাসে নির্ধারিত ৫০০ টাকা পাঠিয়ে দিই৷ আমরা ৮ভাই ১ বোন। আমি ছাড়া বাকি সবাই এক জোট হয়ে আমাকে ঘায়েল করতে এ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে তারা দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে । সর্বশেষে পিতা-মাতাকে মারধর করেছি বলে অভিযোগ এনে আদালতে মাকে বাদি করে মামলা দায়ের করেছে। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলক মামলায় আনিত অভিযোগ সঠিক তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
মা নুরজাহান বেগম বলেন, আব্দুল লতিফ আমার বড় ছেলে। তার কাছে আমাদের মাসিক খোরাকি বাবদ টাকা চাইতে গেলে আমাকে এবং আমার স্বামীকে গালমন্দ করে। এক পর্যায়ে আমাদের গায়ে হাত পর্যন্ত তুলে।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ শামসুল আলম বলেন, ঘটনাটা তাদের পারিবারিক। ভাই- ভাইয়ের মধ্যে কিছু বাড়ি ভিটার জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। কিন্তু এখানে আব্দুল লতিফ যে তার মা-বাবার উপর হামলা করেছে বলা হয়েছে ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার এলাকায় ঘটেনি৷ মা বাবার মাসিক খোরপোষের বিষয়ে শালিসি বৈঠকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল মোস্তফা বলেন, পারিবারিক দ্বন্ধ ও পিতা মাতার উপর হামলার ঘটনায় দুটি মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর আদালতের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হবে