সুদানে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ নিল সেনাবাহিনী

বিভাগীয় প্রতিবেদক। | মার্চ ২১, ২০২৫ | ০৪:০৩
ছবি: প্রতিবেদক।

প্রায় দুই বছর পর সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনী রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সেনারা প্রাসাদের দিকে অগ্রসর হয় এবং শুক্রবার পুরো নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের খবর নিশ্চিত করেছে রয়টার্স।

প্রাসাদ পুনর্দখলে সেনাবাহিনীর অভিযান
সুদানের রাষ্ট্রীয় টিভি ও সামরিক সূত্র জানিয়েছে, সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের আশপাশের এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে এবং আধা সামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সদস্যদের খুঁজে বের করছে। তবে আরএসএফের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, খার্তুমের কিছু কেন্দ্রীয় এলাকায় মাঝেমধ্যে গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে।

বিশ্বের অন্যতম বড় মানবিক সংকট
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সুদানের এই সংঘাত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। দেশজুড়ে দুর্ভিক্ষ, রোগব্যাধি এবং ভয়াবহ বাস্তুচ্যুতি দেখা দিয়েছে। উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে, বিশেষ করে আরএসএফের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগও রয়েছে। তবে দুই পক্ষই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

কীভাবে সংঘাতের সূত্রপাত?
২০২৩ সালের এপ্রিলে যুদ্ধ শুরু হলে আরএসএফ দ্রুত প্রেসিডেন্ট প্রাসাদসহ রাজধানীর বড় অংশ দখল করে নেয়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সুদানের সেনাবাহিনী আবারও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছে এবং নীল নদের তীরে অগ্রসর হয়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ পুনরুদ্ধার করেছে।

সেনা ও আধা সামরিক বাহিনীর লড়াই অব্যাহত
বর্তমানে আরএসএফ খার্তুম, ওমদুরমান এবং পশ্চিম সুদানের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা এখন দারফুর অঞ্চলের সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি আল-ফাশির দখলের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ফলে সেনাবাহিনী মধ্য সুদানের দখল দ্রুত নিতে সক্ষম হতে পারে এবং এর ফলে দেশের পূর্ব-পশ্চিম আঞ্চলিক বিভাজন আরও গভীর হতে পারে। তবে উভয় পক্ষই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং শান্তি আলোচনার কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ক্ষমতার দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত সুদান
সুদানে চলমান সংঘাতের মূল কারণ সেনাবাহিনীর প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা মোহাম্মদ হামদান দাগলোর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং এক কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

শুধুমাত্র খার্তুম অঞ্চল থেকেই ৩৫ লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে, যা যুদ্ধের আগে এলাকার মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি।

সুদান এখন দুই ভাগে বিভক্ত
বর্তমানে দেশের উত্তর ও পূর্ব অংশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, আর পশ্চিম ও দক্ষিণের বেশির ভাগ এলাকা আরএসএফের দখলে। তবে সংঘাত নিরসনে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

সূত্র: রয়টার্স

ট্যাগঃ

সূত্র: ইন্টারনেট।