১০ বছর হওয়ার আগেই শিশুকে শেখানো জরুরি ৮টি দক্ষতা

বিভাগীয় প্রতিবেদক। | মার্চ ২১, ২০২৫ | ০৪:০৩
ছবি: প্রতিবেদক।

প্রযুক্তির বিকাশ আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে, শিশুরাও খুব ছোট বয়সেই বিভিন্ন গ্যাজেট ব্যবহার শিখে যায়। তবে এসব জ্ঞান সাধারণত মা–বাবার ছায়াতলে থেকেই অর্জিত হয়। কিন্তু যদি কোনো পরিস্থিতিতে শিশুকে একা চলতে হয় বা হঠাৎ করে সে বিপদে পড়ে, তখন কী করবে? তাই ১০ বছর হওয়ার আগেই তাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জীবনদক্ষতা শেখানো প্রয়োজন।

এসব দক্ষতা শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়াবে, তাকে স্বাধীনভাবে চলার সক্ষমতা দেবে এবং অভিভাবকদেরও নিশ্চিন্ত করবে। যেহেতু এসব শিক্ষা সাধারণত স্কুলে দেওয়া হয় না, তাই মা–বাবাকেই হতে হবে শিশুর প্রথম জীবনগুরু।


১. আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো

শিশুকে আত্মরক্ষার প্রাথমিক কৌশল শেখানোর আগে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে হবে। তাকে বুঝতে হবে, কোনো পরিস্থিতিতেই মনোবল হারানো যাবে না। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা ও নিয়মিত দৌড়ের অভ্যাস জরুরি।

প্রাথমিক আত্মরক্ষার কৌশল:

  • বিপদ বুঝলে দেরি না করে দৌড়ে পালানো
  • আক্রমণকারীর হাঁটুতে আঘাত করা (এটি সহজ ও কার্যকর)
  • ঘাড়, চোখ, কান ও নাক লক্ষ্য করে আঘাত করা, যাতে আক্রমণকারী বিভ্রান্ত হয়

২. দিকনির্দেশনা ও মানচিত্র বোঝানো

শিশুকে ছোটবেলা থেকেই দিকনির্দেশনা ও মানচিত্রের ব্যবহার শেখানো দরকার।

করণীয়:

  • বাড়িতে গ্লোব বা মানচিত্র রাখুন এবং সেটি দেখতে উৎসাহ দিন
  • ছুটির দিনে তাকে মানচিত্র বোঝান
  • বাড়ির আশপাশের এলাকা চিনিয়ে দিন
  • পথ হারালে কীভাবে নিজের বাড়ি খুঁজে পেতে হয়, তা শেখান

৩. বাড়ির ঠিকানা ও ফোন নম্বর মুখস্থ করানো

শিশু কথা বলতে শেখার পরপরই তাকে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুখস্থ করানো জরুরি।

শেখানোর বিষয়:

  • নিজের পুরো নাম
  • বাবা-মায়ের নাম ও ফোন নম্বর
  • বাড়ির ঠিকানা (যাতে প্রয়োজনে কাউকে বলতে পারে)

৪. বিপদের বন্ধু চেনানো

শিশুকে শেখাতে হবে, বিপদে কার কাছে সাহায্য চাইতে হবে।

বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক চেনানো:

  • পুলিশ
  • র‌্যাব
  • সেনাবাহিনী
  • ট্রাফিক পুলিশ

যাতে কখনো ভিড়ে মা–বাবাকে হারিয়ে ফেললে বা বিপদে পড়লে সে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাহায্য নিতে পারে।


৫. জরুরি নম্বর ও কাকে ফোন করতে হবে তা জানা

বিপদের সময় ফোন করার জন্য কিছু নম্বর:

  • ৯৯৯ (জাতীয় জরুরি সেবা)
  • ফায়ার সার্ভিস
  • নিকটস্থ আত্মীয় বা প্রতিবেশীর নম্বর

৬. অর্থের ব্যবহার ও কেনাকাটা শেখানো

বাচ্চাকে শেখান:

  • টাকার মূল্য
  • টাকা গুনতে পারা
  • ছোটখাটো কেনাকাটা করতে পারা

৭. মৌলিক গৃহস্থালি কাজ শেখানো

যা শেখানো উচিত:

  • নিজে খাবার খাওয়া ও থালা ধোয়া
  • জামাকাপড় গুছিয়ে রাখা
  • ছোটখাটো রান্নার কাজ (যেমন: চা বানানো, সহজ খাবার গরম করা)

৮. অপরিচিত ব্যক্তির প্রতি সতর্কতা

শিক্ষা দিন:

  • অপরিচিত কেউ খাবার বা উপহার দিলে না নেওয়ার অভ্যাস
  • সন্দেহজনক কেউ অনুসরণ করলে কাছের কোনো দোকানে বা নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেওয়া
  • প্রয়োজনে জোরে চিৎকার করে সাহায্য চাওয়া

শেষ কথা

১০ বছর হওয়ার আগেই শিশুকে এসব গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেওয়া উচিত। এতে সে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে, যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে এবং মা-বাবাও নির্ভার থাকবেন।

ট্যাগঃ

সূত্র: ইন্টারনেট।