২০ বছরেও সংস্কার হয়নি মগনামা জেটিঘাট, ঝুঁকিতে কুতুবদিয়ার তিন লাখ মানুষ
বিভাগীয় প্রতিবেদক। | জুন ২১, ২০২৫ | ০৬:০৬
ছবি: প্রতিবেদক।
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের একমাত্র জেটিঘাটটি গত ২০ বছরেও সংস্কার হয়নি। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় জেটিঘাটটি বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই জেটি দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার প্রায় তিন লক্ষাধিক বাসিন্দা।
জানা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া থেকে মূল ভূখণ্ডে যাতায়াতের জন্য ১৯৯০ সালে মগনামায় এ জেটি নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পরে ২০০৪ সালে অতিরিক্ত চাপ মোকাবেলায় এর সাথে প্রায় ২০০ গজ দীর্ঘ একটি সরু ব্রীজ সংযুক্ত করা হয়।
কিন্তু এরপর থেকে দীর্ঘ দুই দশক পেরিয়ে গেলেও জেটির আর কোনো সংস্কার বা উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে জেটির প্রায় সব পিলার ভেঙে গেছে, অনেক জায়গায় কংক্রিট সরে গিয়ে রড বের হয়ে গেছে। রেলিং ভেঙে গেছে, নেই নিরাপত্তা বেষ্টনী। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
দ্বীপবাসীরা জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই জেটি দিয়ে চলাচল করছেন। অথচ এটি দীর্ঘদিন ধরেই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জেটিটি থেকে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলেও সংস্কারের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
মগনামা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন,
“এই জেটিটি এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন কুতুবদিয়ার সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। পিলারগুলোর রড বেরিয়ে গেছে। সরকার এখান থেকে বিপুল রাজস্ব আয় করলেও সংস্কারে কোনো নজর নেই। আমরা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।”
স্থানীয়দের এমন দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু আশার কথা শোনা গেছে। এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হোসেন চৌধুরী বলেন,
“মগনামা জেটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এর অবস্থা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক অবগত আছেন এবং ইতোমধ্যে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে একটি পরিদর্শক দলও এসেছেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী অর্থবছরে একটি বড় প্রকল্পের মাধ্যমে জেটিটি মেরামত করা হবে।”
কুতুবদিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের এ দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। না হলে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা—এমনই আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।